পতিত জমিতে কমলা চাষ করে তাক লাগালেন বদরুল
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
১৮-০১-২০২৫ ০৫:৪৫:১২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৮-০১-২০২৫ ০৫:৪৬:২০ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : ফোকাস বাংলা নিউজ
দিনাজপুরের সর্বশেষ উপজেলা ঘোড়াঘাটে প্রথমবারের মতো পতিত জমিতে কমলা চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কমলা চাষি বদরুল আলম বুলু। উপজেলাজুড়ে তাঁকে নিয়ে চলছে আলোচনা।
সরেজমিনে বাগান ঘুরে দেখা যায়, ঘন সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে থোকায় থোকায় ঝুলছে রসালো কমলা। পথচারী, দর্শনার্থী ও সাধারণ মানুষ কমলা বাগান ঢুকে ঘুরে ঘুরে কমলা নেড়েচেড়ে দেখছেন। আবার কেউ কেউ মোবাইল ফোনে ছবিও তুলছিলেন।
স্থানীয়ভাবে কমলা চাষ হলে আমদানি কমবে, পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে। তাই বদরুল আলমকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
ঘোড়াঘাটের নিতাইশাহ এলাকায় বুলুর বাগানে কমলার বাণিজ্যিক চাষ হচ্ছে। কৃষি ডিপ্লোমা শেষ করে চাকরি না পেয়ে চোখেমুখে হতাশার ছাপ নিয়ে চার বছর আগে নিজস্ব চার বিঘা পতিত জমিতে তৈরি করেন কমলার এই বাগান। তার বাগানে রয়েছে দার্জিলিং, চায়না, ভুটানসহ কয়েকটি জাতের কমলার গাছ। ফলনও হয়েছে ভালো। রং ও আকার দেখে গাছ থেকে পছন্দমতো কমলা নিয়ে দর্শনার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন বাগান মালিক।
কমলা বাগানে কথা হয় কয়েকজন দর্শনার্থীর সাথে। তাঁরা জানান, আমাদের জেলার মাটির মান খুবই ভালো। ঘোড়াঘাটে এই কমলার বাগানের কথা অনেক শুনেছি। দেখতে এসে খুব ভালো লেগেছে। এর আগে কখনো এমন কমলার বাগান দেখেনি। ভারত থেকে আমদানিকৃত কমলা খেয়েছি। আজ আমাদের জেলার মাটি থেকে উৎপাদিত কমলা খেলাম। অনেক মিষ্টি এবং সুস্বাদু।
কথা হয় শ্রমিক আতাউর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, বাগান তৈরির শুরু থেকে আমি এখানে কাজ করে আসছি। বাগানের প্রতিটি গাছে প্রচুর কমলা ধরেছে। এগুলো অনেক মিষ্টি এবং সুস্বাদু। প্রতিদিন স্থানীয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন এই বাগান দেখতে। এছাড়াও বাগান থেকে তারা টাটকা কমলা কিনছেন। এসব কমলা আমরা ২০০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি করছি।
বাগান মালিক বদরুল আলম বুলু বলেন, লেখাপড়া শেষ করে চাকরি না পেয়ে হতাশায় ভুগছিলাম। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিই চাকরির পিছনে না ছুটে কৃষিতে সফলতা আনবো। হতাশার ছাপ কাটিয়ে এখন কৃষিতে সফলতা বয়ে এনেছি। বর্তমানে আমার বাগানে থাকা ৪০০টি কমলা গাছের প্রতিটিতে খরচ হয়েছে প্রায় দেড় হাজার টাকা। আর প্রতিটি গাছ থেকে কমলা বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার মতো। বাগানটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা। আশা করছি এই মৌসুমে প্রায় ৭ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করবো ইনশাআল্লাহ!
এদিকে ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বলেন, প্রথমবারের মতো এই উপজেলায় কমলার চাষ হয়েছে। দেশে কমলার উৎপাদন বৃদ্ধি ও আমদানি নির্ভরতা কমানোর পাশাপাশি পুষ্টি চাহিদা মেটাতে কমলার বাগান তৈরিতে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। এই উপজেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে রয়েছে কমলার বাগান। যেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক বেকার যুবকের।
বাংলা স্কুপ/গোলাম মোস্তাফিজার রহমান/দিনাজপুর প্রতিনিধি/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স